ডাঃ আজাদ খান, ষ্টাফ রিপোর্টার: ভালোবাসার বিয়ে,
পরিবার কে না জানিয়ে!
পরিবার কে ম‍্যানেজ করতে কিছুদিন সময় লাগবে, তাই অন্তত এক মাসের জন্য হলেও বাড়ি ভাড়া দেন খালু/খালাম্মা!

এমন কৌশল করেই দেলোয়ার নববধূ কে নিয়ে বাড়ি ভাড়া নেয় নতুন জায়গায়, নতুন ভাবে এবং সময় ও সুযোগ বুঝে স্বার্থ হাসিল করেই লাপাত্তা হয়ে যায় ।

গত ২৯ আগস্ট ২০২১ ইং রবিবার দুপুর ১ ঘটিকার সময় জামালপুর পশ্চিম নয়া পাড়ায় অবস্হিত জনৈক সোনালী ব‍্যাংক কর্মকর্তার বাড়ীর ভাড়াটিয়া শহরের উইসডম সেন্ট্রাল কলেজের ইন্টারমিডিয়েট ১ম বর্ষের একজন ছাত্রীর মেস হতে সু-কৌশলে স্বর্নের কানের দুল, আংটি, গলার চেইন এবং একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় নববধূ রূপী নতুন ভাড়াটিয়া রিয়া। যেগুলোর আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭০,০০০/- টাকা।

একই বাড়ির ভাড়াটিয়া হওয়ায় দেলোয়ারের স্ত্রী ভুক্তভোগী মেসের সেই ছাত্রীর সাথে খুব সখ‍্যতা গড়ে তুলে।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কাজের সহযোগিতা করে দেয়। যেমন- ছাত্রীর মাথায় তেল দিয়ে দেয়া, মাথার চুল আঁচড়িয়ে দেয়া এমনকি অনেক সময় কাপড় চোপড় ধোয়ার কাজও করে দিতো প্রতারক নববধূ। মাঝে একদিন ছাত্রীর গ্রামের বাড়ীতেও বেড়াতে যায়, ছাত্রীর ভাইয়ের সদ‍্যজাত নবজাতক কে দেখার উদ‍্যেশ‍্য করে। ছাত্রীর গ্রামের বাড়ী মালঞ্চ এলাকায় বিশিষ্ট শিল্পপতি ও দানবীর রাজা সাহেবের বাড়ীর পাশে।
সেখানে একটি রাত্রি যাপনও করে সেই মেয়ে। ঐ বাড়িতে হয়তো সেদিন সুবিধা করতে পারে নাই রিয়া ।

ঘটনার দিন (২৯ আগষ্ট) নববধূ রিয়া ছাত্রীকে বলে অনেকদিন হয় ছবি তুলি না আমি, সাথে ভালো কাপড় চোপড় ও নাই আমার। তোমার গয়না গুলো দিবে আমায়, আমি কিছু ছবি তুলবো, এই শুনে সরলমনা ছাত্রী তার স্বর্ণের কানের দুল, হাতের আংটি, গলার চেইন এবং সবশেষে হাতে থাকা এনড্রয়েড মোবাইল ফোনটাও চেয়ে নেয় নববধূ রিয়া।
এসব নিয়ে ঘরের বাইরে যেয়ে আজও ফিরে আসেনি নববধূ ।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর বড় ভাই শামীম রেজা ঘটনা শুনার কিছুক্ষন পর’ই ঘটনাস্থলে পৌছায় এবং বাড়িওয়ালা ও সেখানে অবস্থানরত সকলের সাথে কথা বলে জানতে পারে- মোঃ দেলোয়ার হোসেন ০৯ আগষ্ট দুপুরে রিয়া নামের এক মেয়েকে নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একটি রুম ভাড়া নেয় সেই বাড়িতে।
দেলোয়ারের পরিচিতি স্বরুপ বাড়িওয়ালা কে ডকুমেন্ট হিসেবে তার সাথে থাকা নিজের এনআইড়ি কার্ড প্রদান করে এবং নববধূ রিয়ার বয়স আঠারো বৎসর না হওয়ায় বা এনআইডি কার্ড না থাকার কারণে রিয়ার কোনো পরিচয় পত্র দিতে অপারগতা প্রকাশ করে ।

বাড়ি ভাড়া নেয়ার পর দেলোয়ার হোসেন মাঝে মাঝে সেই বাড়িতে যাতায়াত করতো, মেয়েটির দেখভাল করার জন্য ।

পরবর্তীতে শামীম রেজা বাড়িওয়ালার নিকট হতে দেলোয়ারের এনআইড়ি কার্ডটি হাতে নেয় এবং ঠিকানা অনুযায়ী তৎক্ষনাৎ দেলোয়ারের বাড়ী শাহবাজপুর যায়।
শাহবাজপুর বাজারে স্থানীয় লোকদের সাথে কথা বলে দেলোয়ার হোসেন এর ঠিকানার সত্যতা পাওয়া যায়।
এলাকার লোকজনদের সাথে আলাপচারিতায় দেলোয়ার হোসেন এর অনেক কুকর্ম এবং প্রতারণার প্রমাণ দেয় এলাকাবাসী এবং আরো জানা যায় যে- দেলোয়ারের মুল পেশাই হলো মানুষের সাথে এমন প্রতারণা এবং চুরি করা।

শামীম রেজার নিকট সমস্ত ঘটনা জানার পর শাহবাজপুর বাজারে অবস্থানরত স্থানীয় লোকজন দেলোয়ার হোসেন এর বাড়িতে যায় এবং জানতে পারে দেলোয়ার হোসেন বাড়িতে নেই, পলাতক রয়েছে। দেলোয়ার হোসেন কে না পেয়ে তার বাড়ির লোকদের কে ঘটনা জানানো হয়। কিন্তু দেলোয়ার হোসেন এর পরিবারের পক্ষ হতে এ ঘটনার কোনোরকম সমাধান হওয়ার আশ্বাস বা আশ্বস্ত করেনি দেলোয়ারের পরিবার।

সেদিন হয়তো দেলোয়ার হশাহবাজপুর বাজার বা তার বাড়ীর আশেপাশেই ছিলো! লোকসমাগম বা বাজারময় ঘটনা জানাজানি হওয়াতে দেলোয়ার গা ঢাকা দেয়।

ছাত্রীর ভাই কতৃক সংগৃহীত তথ‍্য মতে
জানা যায়-দেলোয়ার ও তার কথিত স্ত্রীর পরিচয়!

মোঃ দেলোয়ার হোসেন, পিতা-শাহজাহান আলী, মাতা-সবুজা, গ্রামঃ কানাপাড়া (পুর্বপাড়া), শাহবাজপুর ইউনিয়ন, জামালপুর সদর, জামালপুর ।

দেলোয়ারের কথিত এই নববধূ হলো তার ২য় স্ত্রী সে একজন গার্মেন্টস কর্মী।
যার নাম- রিয়া (ছদ্মনাম), সঠিক নাম- রুনা, ঠিকানা- গাজিপুর। পিতার নামঃ রাসেল মিয়া।
আরো জানা গেছে তাদের ঠিকানা মাঝেই মাঝেই পরিবর্তন করেন তারা।

তার ১ম স্ত্রীর নাম শাহনাজ বেগম,
বিয়ে হয় ৫/৬ বছর আগে, তাদের ২ টি সন্তানও আছে। বাবার বাড়ী জামালপুর সদরের ০৯ নং রানাগাছা ইউনিয়নের গোড়ারকান্দা এলাকার বন্দের পাড়া গ্রামে।
এ ব‍্যাপারে কথা হয় দেলোয়ারের
শ্যালক– মেহেদি হাসান মামুনের সাথে। মামুন বলেন- বিয়ের পর থেকেই দেলোয়ার বিভিন্ন ভাবে তার বোনকে নির্যাতন করতো টাকা পয়সা চেয়ে। বোনের সুখের কথা চিন্তা করে মামুন প্রায় ৪/৫ লাখ টাকাও দিয়েছে দেলোয়ার কে।

তার বোন শাহনাজ বাদী হয়ে জামালপুরে করা “শিশু ও নারী নির্যাতন আইন”, একটা মামলাও আছে, যার নং-৫৭/৩১৬ । যে মামলায় দেলোয়ার দেড় মাস হাজত বাসের পর এখন যামিনে মুক্ত আছে।

শ‍্যালক মামুন আরো বলে এমন ঘটনা মাঝে মাঝেই করে দেলোয়ার।

পরিশেষে প্রশাসন সহ সবার কাছে শামীম রেজার আকুল আবেদন, সকলেই এই দেলোয়ার দম্পতির চক্র হতে সাবধান থাকুন এবং যেখানেই এই দেলোয়ার হোসেন এবং তার কথিত স্ত্রী রিয়া কে পাবেন, দয়া করে তাদের আইনের আওতায় আনতে সাহায্য করবেন।

-মোঃ শামীম রেজা, পিতাঃ জাকিরুল ইসলাম, মালঞ্চ, মেলান্দহ উপজেলা, জেলাঃ জামালপুর।